Purchase!

কবিতার সত্তারূপ

প্লেটো একবার বলেছিলেন, ‘কবিতা ইতিহাসের চেয়েও অপরিহার্য সত্যের নিকটবর্তী।’ প্লেটোর এই কথায় বুঝতে পারি, কবিতা একটা ইতিহাসের অংশ এবং সে ইতিহাস সাল-তারিখের হিসেবের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। জীবনানন্দ দাশ থেকে শুরু করে চঞ্চল আশরাফ পর্যন্ত প্রায় পৌঁনে এক শতকের কবিতার সত্য, সত্তা আর ইতিহাস উঠে এসেছে ‘কবিতার সত্তারূপ’ বইতে। একজন, দুজন নয়- তার এই বইতে বিশজন কবি ও তাদের কবিতা ঠাঁই পেয়েছে। কখনো কোন কবি তাঁর সামগ্রিক কাব্য সত্তায় ধরা পড়েছেন, কখনো কোন কবি এসেছেন তাঁর নির্দিষ্ট ঘরানার কবিতা নিয়ে এবং কখনোবা একজন কবি তার একটি মাত্র কবিতা নিয়েই হাজির হয়েছেন এই বইতে। এক কথায় এই বই কবিতার উৎসব। আকারে প্রকারে বড় মাপের এমন কাজ এখন দুর্লভই বিবেচনা করি। এক মলাটের মধ্যে বাংলা সাহিত্যের কুড়িজন কবিকে ধরে রাখা যেন বাংলা কবিতার অপরিহার্য সত্য আর ইতিহাসকে তুলে ধরা।
By তারেক রেজা
Category: প্রবন্ধ
Paperback
Ebook
Buy from other retailers
About কবিতার সত্তারূপ
প্লেটো একবার বলেছিলেন, ‘কবিতা ইতিহাসের চেয়েও অপরিহার্য সত্যের নিকটবর্তী।’ প্লেটোর এই কথায় বুঝতে পারি, কবিতা একটা ইতিহাসের অংশ এবং সে ইতিহাস সাল-তারিখের হিসেবের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই কথাখানি মনে পড়ে গেলো, তারেক রেজা’র ‘কবিতার সত্তারূপ’- পাণ্ডুলিপি পড়তে গিয়ে। জীবনানন্দ দাশ থেকে শুরু করে চঞ্চল আশরাফ পর্যন্ত প্রায় পৌঁনে এক শতকের কবিতার সত্য, সত্তা আর ইতিহাস উঠে এসেছে ‘কবিতার সত্তারূপ’ বইতে। একজন, দুজন নয়- তার এই বইতে বিশজন কবি ও তাদের কবিতা ঠাঁই পেয়েছে। কখনো কোন কবি তাঁর সামগ্রিক কাব্য সত্তায় ধরা পড়েছেন, কখনো কোন কবি এসেছেন তাঁর নির্দিষ্ট ঘরানার কবিতা নিয়ে এবং কখনোবা একজন কবি তার একটি মাত্র কবিতা নিয়েই হাজির হয়েছেন এই বইতে। এক কথায় এই বই কবিতার উৎসব। আকারে প্রকারে বড় মাপের এমন কাজ এখন দুর্লভই বিবেচনা করি। এক মলাটের মধ্যে বাংলা সাহিত্যের কুড়িজন কবিকে ধরে রাখা যেন বাংলা কবিতার অপরিহার্য সত্য আর ইতিহাসকে তুলে ধরা।

আমরা যারা জানি তারেক রেজা একজন কবি ও অধ্যাপক, তারা ঈর্ষান্বিত হতে পারি তার প্রতি। বিশেষত তারেকের গদ্য লেখার অনবদ্য ভঙ্গির প্রতি ঈর্ষা জাগবে আগন্তুক পাঠকের। বোদলেয়ারের পরামর্শ ছিলো, ‘সদাই কবি হও, এমনকি গদ্যেও’। সেই পরামর্শর কথাও মনে পড়বে তারেকের প্রবন্ধের ভাষায়। অধ্যাপক হওয়ার কারণেই তার ভাষা হওয়ার কথা ছিলো আনুষ্ঠানিক কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক। কিন্তু সকল পাÐিত্য আর তথ্যসূত্রকে আড়ালে রেখে তারেক ভাস্বর হয়ে ওঠেন তার পদ্যর মতো সুললিত গদ্য নিয়ে। গুরুগম্ভীর বিষয়ের এমন সুখপাঠ্য গদ্য সচরাচর পড়তে পাওয়ার সুযোগ হয় না আমাদের। প্রবন্ধের শরীরকে তথ্য ভারাক্রন্ত করেন না তিনি। এই গুণ বড় মনোরম। অনিবার্যভাবেই বাংলা কবিতার যে কোন আলোচনা চক্র শুরু করতে হয় জীবনানন্দ দাশকে নিয়েই। অমোঘ নিয়তির মতো তিনি আমাদের কবিতার আত্মীয়। জীবনানন্দ দাশ, বুদ্ধদেব বসু, শামসুর রাহমান, শহীদ কাদরী, নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী প্রমুখের কবিতার আলোচনায় পাঠক ঘুরে আসতে পারবেন নির্দিষ্ট কবির ভুবনেও। এইসব প্রবন্ধে কখনো নন্দনতত্ত¡, কখনো রাজনীতি, কখনো দেশপ্রেম, কখনো একুশ ও একাত্তর উঠে এসেছে সাবলীলভাবে। ফলত, ওই যে, শুরুতে বলেছিলাম এইসব আদতে কবিতার ইতিহাসের গুঢ়ার্থও বটে।

আমার চমক লেগেছে, ঘোর লেগেছে, তারেক রেজা অনেককেই অন্য রকম করে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন আমাদের সঙ্গে। অদ্বৈত মল্লবর্মণ তার ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ উপন্যাসের সুবাদেই বাংলা সাহিত্যে একক এক মহিরূহ। অথচ কী চমকপ্রদ ও গভীর কবিতাও লিখেছেন তিনি তা আমরা তারেকের সূত্রে আবিষ্কার করি। আমেরিকা তো ছিলোই, তবু কলম্বাসই তার আবিষ্কারকর্তা। একই ভাবে আমরা ‘কিত্তনখোলা’, ‘কেরামত মঙ্গল’, ‘হাত হদাই’ আর ‘চাকা’র বিস্ময়কর নাট্যকার সেলিম আল দীনের কাব্য জমিনের খোঁজ পাই তারেকের ‘কবিতার সত্তা’য়।

আরো একটু গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, বহুল পঠিত আর পরিচিত কবির বাইরেও তারেক রেজা আলোচনায় এনেছেন আপাতত কম চেনা অনেককেই। বহুমুখী লেখায় বিস্তৃত সাযযাদ কাদিরের কবি রূপটা যে তাঁর আদত রূপ সেটাও তারেকে লেখায় আবিষ্কার করি। খোন্দকার আশরাফ হোসেন, মাহবুব সাদিক, আবিদ আনোয়ার, বায়তুল্লাহ্্ কাদেরী প্রমুখকে আমরা তারেক রেজার প্রবন্ধ থেকে নয়া ভাবে আবিষ্কার করতে পারি।

কবি, অধ্যাপক, আলোচক তারেক রেজা’র ‘কবিতার সত্তারূপ’ প্রকাশ করতে পেরে ক্রিয়েটিভ ঢাকা আনন্দিত।

মুম রহমান, প্রকল্প পরিচালক, ক্রিয়েটিভ ঢাকা
Creative Dhaka
  • Copyright © 2024
  • Privacy Policy Terms of Use